নিপুণ-জায়েদের পদ নিয়ে হাইকোর্টে রুল শুনানি ফের পেছালো

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির (বিএফডিসি) সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়ে চিত্রনায়ক জায়েদ খান ও নায়িকা নিপুণ আক্তারের দ্বন্দ্বে হাইকোর্টের জারি করা রুলের ওপর শুনানি আরও এক দফা পিছিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিন ঠিক করেছেন আদালত।

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এদিন আদালতে নিপুণের পক্ষে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। জায়েদ খানের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ন, আহসানুল করিম ও নাহিদ সুলতানা যুথি।

গতকাল মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের একই বেঞ্চে রুলের ওপর শুনানি করতে গেলে এ বিষয়ে শুনানির জন্য বুধবার দিন ঠিক করেছিলেন আদালত। আজ ফের রুল শুনানি পেছানো হলো।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের ওপর চেম্বার আদালতের স্থগিতাদেশ এবং স্থিতাবস্থা বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এ বিষয়টি হাইকোর্টে রুল শুনানিসহ নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।

গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ‘ভোট কেনার’ অভিযোগ তুলে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন করেন অভিনেত্রী নিপুণ আক্তার। এমনকি এ পদে পুনরায় ভোটের দাবিও তোলেন তিনি। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জায়েদ খানের পদ বা প্রার্থিতা বাতিল হবে কি না- সে বিষয়ে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গত ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে এফডিসিতে বসেন শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ড। আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ডের প্রার্থিতা বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। এর আগে জায়েদ খানের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের একই ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ বিষয়ে রুল জারি ও আদেশ দেন।

পরে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন নিপুণ। এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে নিপুণের আবেদনটি ১৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে আদেশ দেন। একইসঙ্গে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনে ওই সময়ে দুই পক্ষকে (নিপুণ ও জায়েদ) স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন।

গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পরে জায়েদের বিরুদ্ধে ‘টাকা দিয়ে ভোট কেনা’সহ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ আনেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুণ। ভোটের সাতদিন পর গত ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই বিষয়টি ‘বেআইনি’ বলে দাবি করে আসছেন জায়েদ খান।

এরইমধ্যে গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বিএফডিসি প্রাঙ্গণে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ আক্তারের নেতৃত্বে নতুন কমিটি শপথ নেয়। পরে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে নিজ নিজ পদের চেয়ারে বসেন তারা। তাদের ফুল দিয়ে বরণ করেন সমিতির সদস্যরা।

এর পরদিন ৭ ফেব্রুয়ারি নিপুণ আকতারকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করে আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্তের চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন জায়েদ খান। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত ওইদিনই স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় নিপুণের আইনজীবী আবেদন করেন।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি ওই আপিলের শুনানি নিয়ে জায়েদের সাধারণ সম্পাদক পদ বাতিল করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। একইসঙ্গে আদেশে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থিতাবস্থা জারি করেন চেম্বার বিচারপতি। এ সময়ের মধ্যে জায়েদ-নিপুণ কেউ সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসতে পারবেন না মর্মেও জানানো হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের আদেশের ওপর চেম্বার আদালতের স্থগিতাদেশ এবং স্থিতাবস্থা বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published.

scroll to top