ফ্রান্সে বসে সিনেমার মত বাংলাদেশে চোর চক্র চালান নাসির

খন্দকার মশিউর রহমান – ( ঢাকা – ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২): সাত বছর আগে ফ্রান্সে পাড়ি জমিয়েছিলেন চুরির মামলার আসামি নাসির৷ এখন ফ্রান্সে বসে তামিল অথবা হিন্দি সিনেমার মতো বাংলাদেশে চোর চক্র চালান তিনি। চুরির জন্য অর্থের জোগানও দেন নাসির।

রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারের সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) এ কে এম হাফিজ আক্তার।

গ্রেফতার মঞ্জুরুল হাসান শামীম জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, চক্রের দুজন সদস্য মাসুদ ও ইলিয়াস মিথ্যা নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে ওই মার্কেটে সিকিউরিটি গার্ড ও সুইপারের চাকরি নেন। চাকরিরত অবস্থায় তারা দোকানে চুরির পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য চক্রের অন্য সদস্যের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করতে থাকেন। পরিকল্পনামাফিক ঘটনার আগের দিন চক্রের অন্য এক সদস্য শাহীন মাস্টার নামে একজন ওই মার্কেটে একটি দোকান ভাড়া করে মালামাল তোলার নাম করে বক্স বিশিষ্ট টেবিল ব্যবহার করে কৌশলে তালা ভাঙর সরঞ্জামাদি মার্কেটে প্রবেশ করান।

ঘটনার দিন আনুমানিক রাত ১টার দিকে চক্রের আরও দুই সদস্য শ্রীকান্ত ও তালা ভাঙার মিস্ত্রি রাজা মিয়া মার্কেটে প্রবেশ করে মাসুদ ও ইলিয়াসসহ চুরি করে ভোর ৫টার দিকে মার্কেট থেকে বের হয়। এরপর তাদের ভাড়া করা কেরানীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ এলাকার বাসায় যায়। সেখানে শাহীন মাস্টার ও গ্রেফতার মঞ্জুরুল হাসান শামীম আগে থেকেই চক্রের অন্য সদস্যদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ভাড়া বাসায় চোরচক্রের সব সদস্যের উপস্থিতিতে স্বর্ণ, ইমিটেশন গহনা ও নগদ অর্থ আলাদা করা হয়।

পরদিন আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে শ্রীকান্ত চোরাই স্বর্ণ তার পূর্ব পরিচিত এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে টাকা নিয়ে আবারও ভাড়া বাসায় ফেলেন। এরপর চোরাই স্বর্ণ বিক্রির টাকা, ইমিটেশন গহনা ও চোরাই নগদ অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়ে দ্রুত ওই বাসা ত্যাগ করে আত্মগোপনে চলে যায়।

রজনীগন্ধা মার্কেটে যে প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তাকর্মী ও সুইপার নিয়োগ দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি। অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটি জনবল নিয়োগের আগে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করেনি। এ দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে চক্রের সদস্যরা চুরি করেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মানস কুমার পোদ্দার, মিরপুর জোনাল টিমের টিম লিডার মো. সাইফুল ইসলাম, ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হাফিজ আল আসাদ ও সহকারী কমিশনার আবু তালেব প্রমুখ।

Share this post

PinIt
scroll to top