রাজশাহীতে এক সহকারী শিক্ষিকাকে প্রধান শিক্ষিকা কান ধরে ওঠবস করিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রধান শিক্ষিকা পাল্টা অভিযোগ করেছেন, আপত্তিকরভাবে এডিট করে তার একটি ভিডিও সহকারী শিক্ষিকা ফেইসবুকে পোস্ট করেছেন।
জেলার পবা উপজেলার হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই দুই শিক্ষিকার অভিযোগ তদন্তে নেমেছে শিক্ষা বিভাগ।
সহকারী শিক্ষিকা বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে এই তদন্ত শুরু হয়।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসাম্মৎ রুনা লায়লাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। আগামী রোববার প্রতিবেদন দাখিল করবেন তিনি।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রধান শিক্ষিকা নাজমা ফেরদৌসী বুধবার সকালে তার কার্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকাকে ডেকে পাঠান। সে সময় প্রধান শিক্ষিকার স্বামী শাহ নেওয়াজ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শাহ নেওয়াজ মোহনপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক। এছাড়া সেখানে হাড়ুপুর বিদ্যালয়ের জমিদাতা আব্দুল আজিজ উপস্থিত ছিলেন।
তাদের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষিকা সহকারী শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করান বলে অভিযোগ।
প্রধান শিক্ষিকা এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন।
তিনি বলেন, “ওই সহকারী শিক্ষিকা অন্য এক নারীর দেহের সঙ্গে আমার মুখমণ্ডল জুড়ে দিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করেছেন। ভিডিওতে মেয়েটিকে নাচতে দেখা যাচ্ছে। তার সামনে দাঁড়িয়ে একজন পুরুষ মানুষ কথা বলছেন। ভিডিওটি সহকারী শিক্ষিকা তার নিজের ফেইসবুক স্টোরিতে পোস্ট করেছেন।”
কান ধরে ওঠবস করানোর বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি কান ধরে ওঠবস করাইনি। সহকারী শিক্ষিকা যে অপরাধ করেছেন, তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আওতায় পড়ে। মামলা থেকে বাঁচার জন্য এখন মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়েছেন এই সহকারী শিক্ষিকা।”
মামলা কেন করেননি জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “সহকারী শিক্ষিকার স্বামী মারা গেছেন। তার প্রতি অনুকম্পা দেখিয়ে আমি মামলা করিনি।”
প্রধান শিক্ষিকার মাথা জুড়ে দিয়ে ভিডিও তৈরির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সহকারী শিক্ষিকা।
সহকারী শিক্ষিকা বলেন, “আমি প্রধান শিক্ষিকার মাথা জোড়া লাগিয়ে কোনো ভিডিও তৈরি করিনি বা ফেইসবুকে পোস্ট করিনি।
“প্রধান শিক্ষিকার বান্ধবীর সঙ্গে তোলা সুন্দর, ভদ্র একটি ছবি আমি ফেইসবুক স্টোরিতে দিয়েছিলাম। ওই ছবি প্রধান শিক্ষিকা নিজেই হোয়াটস অ্যাপে আমাকে দিয়েছিলেন।
“সে সময় প্রধান শিক্ষিকা তিন দিনের ছুটিতে ছিলেন। গত রোববার তিনি বিদ্যালয়ে এলে কেউ একজন প্রধান শিক্ষিকার ছবি দেওয়ার বিষয়টি জানান। তখন প্রধান শিক্ষিকা আমার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন। এখনও ফেরত দেননি। ছবি দেওয়ার অপরাধে বুধবার আমাকে কান ধরে ওঠবস করান প্রধান শিক্ষিকা। আমাকে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বাধ্য হয়ে আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।”