ব্যর্থতা নয় আমরা সফল হতে চাই, কৃতী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আইজিপি

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, জীবনের যে কোনো পর্যায়ে সফলতা আসতে পারে। আমরা ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই না, সফল হতে চাই। আমরা অন্যের কাছে অনুপ্রেরণা হবো, যাতে অন্যরা আমাদের দেখে শিখতে পারে।

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত সদস্যদের কৃতী সন্তানদের ‘বাংলাদেশ পুলিশ মেধাবৃত্তি-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য দেন এআইজি (এডুকেশন, স্পোর্টস অ্যান্ড কালচার) মো. সোহেল রানা। কৃতী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত ডিআইজি শাহীনা আমীন এবং ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) এ বি এম জাকির হোসেন। বৃত্তিপ্রাপ্ত মেধাবী সন্তানদের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় সাফল্য অর্জনকারী মো. আবুল হাসনাত ও নাজিয়া মুমতাহিনা এবং এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের অধিকারী মল্লিক ফাইজ ইসলাম মিহান ও ফারজানা হক প্রমি বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে আইজিপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। এ দেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের।

মেধাবী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিজের মধ্যে দেশপ্রেম থাকলে দেশের বাইরে থাকলেও দেশের জন্য নিবেদিত হয়ে দায়িত্ব পালন করা যায়। দেশ যদি উন্নত ও সমৃদ্ধ হয় তাহলে তোমাদের সাফল্যে মা-বাবার কষ্ট সফল হবে। তোমরা ভালো রেজাল্ট করে মা-বাবার মুখ যেমন উজ্জ্বল করেছ, তেমনি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রেও তোমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। আমরা বাংলাদেশকে ২০৪১ সালে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছি। সে স্বপ্ন পূরণে কৃতী শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে।

পুলিশ প্রধান বলেন, তোমাদের জ্ঞানচর্চা শুধু পাঠ্য বইয়ে সীমাবদ্ধ না রেখে বিভিন্ন বইও পড়তে হবে। ডিজিটালাইজেশনের কারণে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে মোবাইলের ব্যবহার বাড়ছে। মোবাইল দিয়ে অনেক কিছু জানার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা ডিজিটাল ডিভাইস অবশ্যই ব্যবহার করবো। কিন্তু এর মধ্যে হারিয়ে যাবো না।

তিনি বলেন, জীবনে ব্যর্থতা আসতে পারে। সব কাজে সফলতা আসবে এমন নয়। এজন্য দমে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সবার মধ্যে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। নিজেদের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, করোনাকালে যখন মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে তখন ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে নিজের বেঁচে থাকার জন্য মা-বাবাকেও সন্তানকে ছেড়ে চলে যেতে আমরা দেখেছি। সন্তান অনেক সময় মা-বাবা ছেড়ে চলে যায়, তাদের পরিত্যাগ করে। সাধারণত মা-বাবা সন্তান ছেড়ে চলে যায় এ রকম আমরা দেখি না। এ অবস্থার মধ্যেও বাংলাদেশ পুলিশ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের সেবা দিয়েছে, মৃত ব্যক্তির জানাজা পড়েছে, দাফন-কাফন করেছে। এ বিশাল কর্মযজ্ঞের মধ্যে পুলিশ মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছে, আস্থা অর্জন করেছে।

সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, কৃতী সন্তান হিসেবে তোমাদের সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ একটি বৃহৎ পরিবার। তোমরা ভালো রেজাল্ট করে তোমাদের মা-বাবার সম্মান যেভাবে বৃদ্ধি করেছ তেমনি বাংলাদেশ পুলিশেরও গৌরব বাড়িয়েছ। আজকের মেধাবৃত্তি তোমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা যোগাবে। আমরা তোমাদের অনেক উঁচুতে দেখতে চাই।

কামরুল আহসান বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরেও খেলাধুলা ও অন্যান্য সহপাঠক্রমিক কার্যক্রমে তোমাদের অংশ নিতে হবে।

পরে প্রধান অতিথি মেধাবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও নগদ অর্থ তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, কৃতী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ২০২১ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সব বিষয়ে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৭৭৭ জন ও এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সব বিষয়ে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৬০২ জনসহ মোট ১ হাজার ৩৭৯ জন মেধাবৃত্তি পেয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় মোট ২৫২ জনকে মেধাবৃত্তি দেওয়া হয়েছে।

Share this post

PinIt
scroll to top