মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বরাবর নিবেদন – সশস্ত্রবাহিনীর (অবঃ) সদস্যদের প্রাণের দাবী বর্তমান বাজেটে One Rank One Pay এবং Ration System চালু করনে বরাদ্দ প্রদানঃ-
(১) OROP – One Rank One Pay.
যেমন আজকের একজন মেজর জেনারেল পদবীর অফিসার অবসরে গিয়ে ৫০% পেনশন সারেন্ডার করার পর ধরলাম মাসিক ৫০,০০০/ পেনশন পান।
অথচ, ২০০০ সনে একই পদবীর একজন জেনারেল সম শর্তে ১০,০০০/ পেনশন পাচ্ছে।
সদ্য অবসরে যাওয়া একজন মেজর পদবীর অফিসার মাসিক ৩৫,০০০-৪০,০০০/ পেনশন গ্রহণ করছেন।
Why This Disparity / Discrimination?
আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে কিন্তু OROP চালু বিধায় There's No Disparity / Discrimination.
ভারতে বর্তমান মোদী সরকারের প্রথম শাসনামলে এটা প্রবর্তন করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্রবাহিনীর সকল পদবীর সদস্যদের দাবী এবং পরবর্তীতে আন্দোলনের মুখে একজন সুবেদারের মৃত্যুর পর ভারত সরকার OROP বাস্তবায়ন করেন।
আমাদের এখানে অনেকে অর্থনীতি বা Finance এ দক্ষ। তাদের কাছে অনুরোধ করছি, OROP চালু করলে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বছর কত কোটি টাকা এই খাতে অতিরিক্ত ব্যায় হবে।
আরেকটি প্রশ্ন, ভারতে এই OROP কি শুধু সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যগন পাচ্ছে না কি প্রশাসন সহ অন্যান্য ক্যাডার সার্ভিসের অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরাও পাচ্ছে কারো জানা থাকলে জানালে বাধিত হতাম।
(২) রেশন (Ration System):
আমি যদি ভূল না হয়ে থাকি তবে সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা বর্তমানে রেশন পাচ্ছে না। কিন্তু পুলিশ বাহিনী পাচ্ছে। ১/১১ সরকারের সময় রেশন প্রথা বন্ধ করে রেশন ভাতা জনপ্রতি ৪১৮/ চালু করা হয় যা বছর বছর Inflation এর পরেও একই রয়েছে।
আমার প্রচন্ড কষ্ট লাগে যখন দেখি ৮,০০০/১০,০০০ টাকায় আমাদের অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক মিল, ফ্যাক্টরীতে দাড়োয়ানের কাজ করছে। দাড়োয়ান বা কোন পেশাকেই আমি খাঁটো করে দেখি না, কিন্তু Soldier's Pride চূর্ণ হওয়া কেমনে মেনে নেই বলেন তো? দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার দাড়োয়ান আমরা সশস্ত্রবাহিনীর সবাই। এতে গৌরব ও মর্যাদা আছে। কিন্তু…………?
রেশন প্রসঙ্গে ফিরে আসি। রেশন প্রথা যদি চালু হয় অথবা ১/১১ পরবর্তী যেসময় হতে এটা বন্ধ করে ৪১৮/ রেশন ভাতা চালু হলো, তখন হতে প্রতি বছর Inflation & Market Price এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে রেশন ভাতা প্রতিবছর অটো বৃদ্ধি যৌক্তিক নয় কি?
আমি ব্যাক্তিগতভাবে রেশন প্রথা যা বর্তমানে পুলিশ বাহিনীতে চালু এবং ১/১১ এর পূর্বে সশস্ত্রবাহিনীতে চালু ছিলো, তা পূনঃপ্রবর্তনের পক্ষে। কারন বাংলাদেশে যেভাবে রেশনে প্রদানকৃত দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত কল্পে আমার প্রস্তাবটি কল্যানকর হবে বলে মনে করি।
উপরোক্ত দুইটি দাবী, পাওনা, আব্দার যে নামেই আখ্যায়িত করি না তা কল্যান বিষয়ক। অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্রবাহিনীর অফিসারদের কল্যান দেখভাল করার দায়িত্ব Retired Armed Forces Officers Welfare Association (RAOWA) এবং সংশ্লিষ্ট তিন বাহিনীর কল্যান পরিদপ্তর সমূহ। আমি সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনী প্রধানগনের হস্তক্ষেপ কামনা করি OROP & Ration System চালুকরণে Armed Forces Division, Ministry of Defence & Ministry of Finance হতে অতি জরুরীভিত্তিতে মাননীয় প্রতিরক্ষা এবং গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা ও সশস্ত্রবাহিনীর শুভাকাঙ্ক্ষী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদয় সম্মতি গ্রহণ করতঃ আমাদের প্রাণের চাহিদা দুটো এই সদ্য প্রস্তাবিত বাজেটে সংযুক্ত করবার।
বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। বাংলাদেশের সকল নাগরিক এদের সম্মান করেন। জাতীয় দূর্যোগে এই সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যগণ নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে দেশের জনগণ রক্ষাকে পবিত্র দায়িত্ব হিসাবে নিয়ে মনেপ্রাণে অংশগ্রহণ করেন। জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে এই বাহিনী দেশের সম্মান উজ্জ্বল শুধু করে না। এদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশের ফরেন রিজার্ভ ও জাতীয় অর্থনীতিতে ক্রমাগত অবদান রেখে চলছে।
একজন অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য হিসাবে আমাদের এই চাওয়া কি অযৌক্তিক?
একজন আশাবাদী গর্বিত সৈনিক হিসাবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই প্রস্তাবটিকে আলোর মুখ দেখাতে সংশ্লিষ্ট সকলে সাহায্যের হাত প্রসারিত করবেন।
বিনীত,
মেজর (অবঃ) আহমেদ ফেরদৌস
রিং রোড, মোঃপুর, ঢাকা।
জুন ৯, ২০২১।