মায়ের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জাতিসত্তা, স্বকীয়তা আর সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষার আন্দোলনের যাঁরা আত্মত্যাগ করেছেন, সেসকল বীর শহীদদের স্মৃতিস্তম্ব ‘শহীদ মিনার’ এর মর্যাদা রক্ষার দাবি জানান বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ)।
রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পনের মাধ্যমে সংগঠনের পক্ষ থেকে এমন দাবি জানানো হয়।
এ সময় সংগঠনের সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় বলেন, শুধু ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখকে ঘিরেই শহীদ মিনারের মত পবিত্র জায়টিকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করলে হবে না, এটির রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু আমরা দেখে আসছি, একুশ ফেব্রুয়ারির দিনটি ছাড়া বছরের অন্যান্য দিনগুলো সরকারের কোনো পরিকল্পনা কিংবা কর্মসূচী একদিকে যেমন প্রতীয়মান নয়, অন্যদিকে অধিকাংশ দর্শনার্থী পায়ে জুতা নিয়েই শহীদ মিনারের মূল বেদীতে উঠে পড়তে দেখা যায়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
বোয়াফ সভাপতি আরও বলেন, রক্ষনাবেক্ষণহীন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেহাল অবস্থা দেখেই অনুমান করা যায়, দেশের ইউনিয়ন, উপজেলা কিংবা জেলায় জেলায় নির্মাণ করা শহীদ মিনারের পবিত্রতা কিংবা ভাষা শহীদের মর্যাদা কতটুকু রক্ষা করা হচ্ছে-এটি আমাদের পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে।
কবীর চৌধুরী তন্ময় বলেন, ভাষা আন্দোলনের সত্তর বছরে দাঁড়িয়ে একদিকে যেমন শহীদদের সুনির্দিষ্ট কোনো তালিকা করতে পারিনি, অন্যদিকে শহীদদের আত্মত্যাগের ইতিহাস অঙ্কুর থেকেই বাঙালি জাতির ভেতর শ্রদ্ধাঘ্যভাবে তুলে ধরতে পারিনি। আর তাই, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের মত চত্বরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেও একপ্রকার আনমনাভাবেই সকল শ্রেণিপেশার মানুষ জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে বিচরণ করে নিজেদের অজ্ঞতা প্রকাশ করে থাকেন।
শহর থেকে গ্রামে কিংবা বনাঞ্চলে, যেখানেই মানুষের বসবাস, সেখানেই মায়ের ভাষা বাংলাকে পৌঁছে দিতে হবে। আর গবেষণার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমেই ভাষা শহীদের আত্মত্যাগের মূল্যায়ন করা হবে এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আরও সমৃদ্ধ হবে।
বোয়াফ সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়ের নেতৃত্বে পুষ্পার্পনে অংশগ্রহণ করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক উত্তম কুমার, সদস্য নাঈমুর রহমান ইমন।