গত সপ্তাহের তুলনায় বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বাজারে বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। রাজধানীর হাতিরপুল, নিউমার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, চাল, ডাল, সয়াবিন তেল, চিনি এবং মাংসের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে সবজির দামও।
গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে সব ধরনের মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। আজকে (বৃহস্পতিবার) বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। লেয়ার মুরগির দামও ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা। সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকায়।
মুরগির দাম সামনের দিনগুলোতে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ হিসেবে হাতিরপুল বাজারের প্রোটিন হাউসের মালিক সোহাগ মিয়া বলেন, ‘সরকারি বিধি নিষেধ নাই। এখন বিয়ের ধুম পড়ছে। তাই মুরগির চাহিদা বেশি, দামও বাড়বে। এই সপ্তাহের তুলনায় আগামী সপ্তাহে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ার সম্ভাবনা রয়েছে সব ধরনের মুরগির।’
গরুর মাংস ৪০ টাকা কেজিতে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৪০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে। খাসির মাংসের দাম ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকায়। আর ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটি এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।
এদিকে প্রায় সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। নাজিরশাইল ৭৫ টাকা, মিনিকেট ৬৫ টাকা, আটাশ এবং সব ধরণের মোটা চাল ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মশলার দাম স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে মসুর ডালের দাম। দেশি মসুর ডাল ২০ টাকা বেড়ে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, তুরষ্ক ১০০ টাকা, আদা (দেশি) ১০০ টাকা ও চায়না ৭০ টাকা, রসুন (দেশি) ৬০ টাকা ও চায়না ১১০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
দাম বেড়েছে পেঁয়াজেরও। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে এই পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা দরে। সাদা চিনি ৮০ টাকা ও লাল চিনি ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সয়াবিন তেল লিটারে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কোম্পানি ভেদে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের আজকের বাজার মূল্য ১ লিটার ১৬৫ থেকে ১৬৮ টাকা, ২ লিটার ৩২০ থেকে ৩২৮ টাকা এবং ৫ লিটার ৭৭০ থেকে ৭৮০ টাকা।
কিছু সবজির দাম মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। আবার কিছু সবজীর দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি আলু ১৬ থেকে ২০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ১০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা ও গোল বেগুন ২০ টাকা বেড়ে ৯০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, করোলা ১০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচা পেঁপে ২৫ টাকা, পটল ১৬০ টাকা, সীম ৫০-৬০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। মাঝারি সাইজের লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা।
মাছের যথেষ্ঠ সরবরাহ রয়েছে বাজারে। তারপরও দাম তুলনামূলক বেশি। প্রতি কেজি রুই আকার ভেদে ৩৫০-৪০০ টাকা কেজি, কাতল (বড়) ৩৫০ টাকা, বড় চিংড়ি ৭০০ টাকা, মাঝারি চিংড়ি ৫৫০-৬০০, ছোট চিংড়ি ৪৫০-৫০০ টাকা, নদীর মাঝারি চিংড়ি ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাবদা ৪৫০-৫০০ টাকা, কৈ ২২০ টাকা, মলা ৩৫০ টাকা, শিং (দেশি) ৭০০ টাকা ও চাষের ৪০০ টাকা, মাগুর ৫০০ টাকা, টেংরা ৭০০, বড় রূপচাঁদা ৯০০ টাকা দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
নিউমার্কেট বাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী সাইফুল মাহমুদ বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। এসব দেখার কেউ নেই। আমাদের মতো অল্প আয়ের মানুষরা আর পারছি না। চাল, ডাল, চিনি ও তেলসহ সবকিছুর দামই বাড়তি।’
চালের দাম বাড়া প্রসঙ্গে চাঁদপুর রাইছ মিলের মালিক মোতালেব মিয়া বলেন, ‘আমাদের আসলে কিছু করার নেই। মিল থেকে দাম বাড়ালে বাজারেও তার প্রভাব পড়ে। গত সপ্তাহের চেয়ে এই সপ্তাহে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চালে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। আমরা কম দামে কিনলে কম দামে বিক্রি করি, বেশি দামে কিনলে বেশি দামে বেচি।’