প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে গমের ক্ষেত

ঠাকুরগাঁওয়ে একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের মাঠে গমের আবাদ করা হয়েছে। বর্তমানে সেই স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৯২ জন।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি উপজেলার হরিণমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই আবাদ করা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি সীমানা প্রচীর দিয়ে ঘেরা। বিদ্যালয় ভবনের বারান্দা ঘেঁষে শুরু হওয়া বেশ বড় বড় গমের চারায় পূর্ণ মাঠ। সীমানা প্রাচীরের ভিতরের মাঠটি দেখলে কোনো আবাদি জমি মনে হচ্ছে। পশ্চিম পাশে থাকা শহীদ মিনার ঘেঁষেই স্বল্প জায়গা রাখা হয়েছে ভবনে প্রবেশের জন্যে।

এখন দেশের সকল সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয় গুলোতে দোলনা ও স্লিপারসহ বিভিন্ন শিশু বিনোদন সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একই সময়ে এই হরিণমারি স্কুলের মাঠ জুড়ে করা হয়েছে গমের আবাদ। ফলে স্কুলের শিশু ছাত্রছাত্রীরা বিনোদন বঞ্চিত হচ্ছে। মাঠ না থাকায় ভবনের বারান্দাতেই সহপাঠীদের সাথে খেলাধুলা করছে শিশুরা।

স্কুলে অধ্যয়নরত এক শিক্ষার্থীর বাবা হাসান আলী জানান, শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি যদি স্কুলে বিনোদনের ব্যবস্থা থাকে তাহলে শিশুরা উৎসাহিত হয়। কিন্তু এখানে সহপাঠিদের সাথে খেলার জন্যে মাঠটুকু নেই। এই কারণে আমার সন্তানসহ এলাকার অনেক শিশুই এখন স্কুলে যেতে চায়না।

১৯৫৪ সালে স্থানীয় সমাজ সেবক খোস মোহাম্মদ ও তার তিন ভাই মিলে হরিণমারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ২.৩ একর জমি দান করেন। তবে সম্প্রতি দাতাদের উত্তরসূরিরা গমের চাষাবাদ করা স্কুল মাঠের অংশটুকু নিজেদের বলে দাবি করছে। তাই জমি দখলে রাখার জন্যেই সেখানে আবাদ শুরু করেছে তারা।

বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার জমির উত্তরসূরি দাবিদার ও গম আবাদকারীদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি।

এই বিষয়ে কথা হয় হরিণমারি স্কুলের প্রাধান শিক্ষক আনজুমান আরা বেগমের সাথে। তিনি প্রথম খবরকে বলেন, আমাদের স্কুলের জমি নিয়ে কিছু ঝামেলা আছে। এই অংশের দাবিদাররা এখানে আবাদ করেছে। আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। আবাদ শুরু করার সময় আমি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে অবগত করেছি। তখন তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

তবে অবগত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে প্রাথমিকের ভারপ্রাপ্ত বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আজমল আজাদ প্রথম খবরকে বলেন, আমাকে কেউ বিষয়টি জানায়নি। একটি বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের ভিতরে এরকম চাষাবাদ কখনোই কাম্য নয়। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় শুরুতেই বিষয়টি আমি জানতে পারনি, দুইদিন আগে জেনেই ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছি। এখানে সহকারী শিক্ষা অফিসার ও প্রধান শিক্ষকের গাফলতি আছে।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published.

scroll to top