প্রাথমিক স্কুল পাচ্ছে বেদে সম্প্রদায়ের শিশুরা

জন্মের পর থেকে পরিবারের মধ্যে শিশু প্রথম শিক্ষা পেলেও বর্তমান সমাজ পরিস্থিতি অনুযায়ী শিশুকে বিদ্যালয় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মাধ্যমে গড়ে তোলা জরুরি। কিন্তু কুমিল্লার বেদে সম্প্রদায়ের অভিভাবকদের বৈচিত্রময় জীবনধারা ও অনগ্রসর বসতিতে বেড়ে ওঠা তাদের শিশুরা বঞ্চিত স্কুলের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে। এই শিশুরা জানেই না প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কি।

এই প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিশু সন্তানরা যাতে বঞ্চিত না হয় তাই কুমিল্লার বেদে সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে স্কুল প্রতিষ্ঠা করছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন। মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের ঐতিহাসিক দিনে বেদে সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য এই প্রথম কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ভিকতোলা গ্রামে স্কুলটি উদ্বোধন করা হবে। ইতোমধ্যে স্কুলের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থিত দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ বাজার। বাজার থেকে উত্তর দিকে ভিকতলা গ্রাম। এই গ্রামে স্থানীয়দের সঙ্গে বসবাস করেন প্রায় দুইশো পরিবারের দেড় হাজারের বেশি বেদে সম্প্রদায়ের লোক। নানা কারণে আশপাশের এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেদে সম্প্রদায়ের শিশু সন্তানদের লেখাপাড়া করা অনেকেটা দূরহ। বিষয়টি শিক্ষানুরাগী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান অনুধাবন করেই বেদে সম্প্রদায়ের শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে এই স্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

ভিকতলা গ্রামের বেদে সম্প্রদায়ের সভাপতি ঝারু মিয়া জানান, বেদে সম্প্রদায়ের সন্তানদের জন্য জেলা প্রশাসক স্যার স্কুল করে দিচ্ছেন এতে আমরা খুব খুশি। দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল ইসলাম খান জানান, দাউদকান্দি উপজেলার ভিকতলা গ্রামে নবনির্মিত স্কুলটিতে তিনশো শিক্ষার্থী পড়ালেখার সুযোগ পাবে। তাদের সঙ্গে পিছিয়ে পড়া স্থানীয় শিশুরাও লেখা-পড়া করতে পারবে।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ভিকতলা, গোলাপের চরে ও মেঘনা উপজেলায় পিছিয়ে পড়া পরিবারের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এরমধ্যে দাউদকান্দি উপজেলার ভিকতলায় বেদে সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য জেলায় প্রথমবারের মতো স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার মধ্যদিয়ে বেদে সম্প্রদায় তথা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিশুরা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রে নিজেদের সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করবে।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published.

scroll to top