সাংবাদিক নির্যাতন ও ক্ষমতার অপব্যবহারে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন

আহ্মেদ পনারা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে যাবেন, আর সাংবাদিকরা লিখবে না। তা কি করে হয় ? আর লিখলেই ক্ষমতার অপব্যবহার মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দিয়ে দিবেন । মনে রাখবেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যারা অপব্যবহার করে এবং অন্যের উপর জুলুম নির্যাতন করে, তারা টিকতে পারে না।

বাংলাদেশে একের পর এক সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দূরে থাক উল্টো মামলা দিয়ে সাংবাদিকদেরই হয়রানি করা হয়৷ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বিশ্লেষকেরা মনে করেন প্রশাসনের উদাসীনতাই এই ধরনের ঘটনা উস্কে দিচ্ছে৷

দেশের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে বসে বিভিন্ন ভাবে নিরীহ জনগণকে হয়রানি, জুলুল নির্যাতন করছে। এতে করে সরকারের এতো উন্নয়ন এবং অর্জন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। 

দেশের নিরীহ জনগণকে কোনো ধরনের হয়রানি না করতে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপরও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্ঠায় কুচক্রী মহল ঘৃন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। 

দেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন জাতির বিবেক বলে পরিচিত সাংবাদিক সমাজ। বস্তুনিষ্ঠ সত্য সংবাদ প্রকাশ হলেই তাদের ওপর নেমে আসে লৌমহর্ষক নির্যাতন। যেটা কোন সভ্য দেশের মানুষ আশা করে না।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসেবে, ২০১৯ সালে ১৪২ জন সাংবাদিক, হামলা, মামলা বা গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে ২৩টি ঘটনায় সরাসরি সরকারি দলের লোকজন জড়িত। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত ছয়টি ঘটনায়। পাশাপাশি ৫৭টি মামলা হয়েছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে।

গত শুক্রবার ( ১৩ মার্চ) মধ্যরাতে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামের বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক বছরের কারাদণ্ড দেয় জেলা প্রশাসন। এই ঘটনা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।

কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে সাজা দেওয়ার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, “একজন সাংবাদিককে ধরতে মধ্যরাতে তার বাসায় ৪০ জনের বাহিনী গেল, এটা তো বিশাল ব্যাপার! তিনি কি দেশের সেরা সন্ত্রাসী?”

সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে ঘরের দরজা ভেঙে তুলে নিয়ে মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেওয়া কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনকে শুধু প্রত্যাহার করলেই হবে না। ঐ ডিসির অনিয়ম ও দুর্নীতি গুলো বিভাগীয় সঠিক তদন্ত করতে হবে।

কোনো রাষ্ট্রে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থাকলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হয়। এতে করে বিভিন্ন সময় মত প্রকাশের স্বাধীনতা চর্চাকারী, বিশেষ করে সাংবাদিকরা আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই রাষ্ট্রকেই সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আলাদা আইন প্রণয়ন ও তাদের বিরুদ্ধে সংঘঠিত অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

একজন সংবাদকর্মী হিসাবে সরকারের কাছে আকুল আবেদন সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আলাদা আইন প্রণয়ন করুন এবং  কুড়িগ্রামের ঐ ঘটনার সঠিক বিচার চাই এবং ডিসির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই!

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published.

scroll to top