প্রাথমিকের যেসব শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ

অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগে প্রাথমিকের নয় শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশের জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন- বাবুগঞ্জ সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ঐশী তাবাসসুম। তিনি ১ লাখ ৮৩ হাজার ৪৮২ টাকা অতিরিক্ত নিয়েছেন। বাবুগঞ্জ উপজেলার চাচারি পাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আল-আমিন সরদার। তিনি নিয়েছেন ২ লাখ ১৯ হাজার ৮০ টাকা। বাবুগঞ্জের হিজলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জামাল হোসেন। তিনি নিয়েছেন ৩ লাখ ৭০ হাজার ৬৪১ টাকা।

রহমতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্তার হোসেন নিয়েছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৪৩৫ টাকা, জাহাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামাল হোসেন ৮৫ হাজার ৩৬৪ টাকা, শিলনদিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনির হোসেন ৯৯ হাজার ৩১৭ টাকা, বাবুগঞ্জ সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নুরুল হক ৭৫ হাজার ৭১০ টাকা, কয়াদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাজী হারুন-অর-রশিদ ৭১ হাজার ৮৫৫ টাকা ও হিজলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমেনা খাতুন ১৯ হাজার ৪৪০ টাকা অতিরিক্ত নিয়েছেন।

জানা যায়, বাবুগঞ্জ উপজেলার চাচারি পাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আল-আমিন সরদার ২০১৩ সাল থেকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তিন বছর অন্তর একটি শ্রান্তি বিনোদন ভাতা পাওয়ার কথা কিন্তু তিনি গত পাঁচ বছর টানা ভাতা উত্তোলন করেছেন। প্রতিবছর নিয়েছেন চারটি বোনাস, তুলেছেন দ্বিগুণ বেতন। একই কাজ করেছেন বাবুগঞ্জের হিজলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জামাল হোসেন।

তিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে সহকারী হিসাব রক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত শ্রান্তি বিনোদন ভাতা ও বেতন দেখিয়ে তিন লাখ ৭০ হাজার ৬৪১ টাকা বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়েছেন। অন্য শিক্ষকদের শ্রান্তি বিনোদন ভাতা না দিতে পারায় গত ডিসেম্বরে বিষয়টি নজরে আসে।

বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ ডিসেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির নেতারা আল-আমিন সরদারের অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয়টি ধরে ফেলেন। এরপর তাঁরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকবর কবিরকে জানান। আকবর কবির তদন্ত শেষে নিশ্চিত হন। গত ১৭ ডিসেম্বর অতিরিক্ত টাকা নেয়ায় অভিযুক্ত ৯ শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ দেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আল-আমিন সরদার বলেন, ‘আমাকে ফাঁসানোর জন্য জামাল এ কাজ করেছেন।’

তবে জামাল হোসেন বলেন, ‘আমার অ্যাকাউন্টে যে বাড়তি অর্থ গিয়েছে তা আল-আমিনের কারসাজি।’

এ প্রসঙ্গে বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকবর কবির বলেন, ‘সব শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। নোটিশের জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published.

scroll to top