১৮ বছর পর খুলল প্রাণহীন সেই প্রাথমিক বিদ্যালয়

কুমিল্লা নগরের দক্ষিণ কান্দিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কুমিল্লার ঠাকুরপাড়ার মদিনা মসজিদ সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত বিদ্যালয়টি তালাবদ্ধ ছিল ১৮ বছর ধরে।

এ নিয়ে গতকাল 'এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টির দেহ থাকলেও নেই প্রাণ!' শিরোনামে সংবাদ প্রথম খবরে প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে এলে  বিদ্যালয়টি খুলে দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা চালার ফুটোয় সূর্যের আলো এসে পড়ছে বিদ্যালয় ঘরে। পুরো ঘর জরাজীর্ণ, নড়বড়ে। কিছু বাঁশ ঝুলে আছে মেঝের ওপর। পাশে একটি বোর্ডে শিক্ষামূলক লেখা। একটি টেবিল, একটি চেয়ার ও দু’টি লো বেঞ্চ নিয়ে টিনশেড ঘরে বসে আছেন দু’জন শিক্ষক। তারা ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা ও বিদ্যালয়টির অস্তিত্ব জানান দিতে কাজ করছেন। পরিত্যক্ত বিদ্যালয় ঘরে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তারা। বাইরে ভর্তি বিজ্ঞপ্তির ব্যানার ঝোলানো হয়েছে।

জানা যায়, বিদ্যালয়টি ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৪ সালে পরিত্যক্ত হওয়ার সময় পর্যন্ত এখানে পাঁচজন শিক্ষক ছিলেন। যাদের চারজনই অবসরে চলে গেছেন। বর্তমানে তিনজন এমএলএস পালা করে বিদ্যালয়টির দেখভাল করেন। অন্য বিদ্যালয়ে কাজ করার পাশাপাশি তারা এ বিদ্যালয়টিতে সময় দেন। দু’জন শিক্ষক আছেন। তাদের একজনের নাম ফারজানা হায়দার। তিনি কুমিল্লা সদরের আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ডেপুটেশনে এ বিদ্যালয়ে এসেছেন। বিদ্যালয়টির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তিনি। আরেকজন শামীমা আক্তার। তিনি নগরীর হোচ্ছামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এ বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে এসেছেন। 

শিক্ষক শামীমা আক্তার এ বিদ্যালয়ে আসতে পেরে উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, আমরা এখানে চ্যালেঞ্জ নিতে এসেছি। বিদ্যালয়টির অবস্থানের কারণে শিক্ষার্থী বেশি ভর্তি হবে। দ্রুত নতুন ভবন করা হলে এর সুফল পাবেন এখানকার বাসিন্দারা।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারজানা হায়দার বলেন, বিদ্যালয়টিতে এ বছর ২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। তারা আপাতত ঠাকুরপাড়ার দু’টি বিদ্যালয়ে ক্লাস করছে। কুমিল্লার অন্যতম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিণত হবে দক্ষিণ কান্দিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আমরা সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। এখন দরকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, বিদ্যালয়টির অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। এখানে জায়গার স্বল্পতা আছে। তাই বাচ্চাদের খেলাধুলা ও শরীরচর্চার জন্য গ্রাউন্ডফ্লোরকে মাঠের মতো করে ব্যবহার করা হবে। ক্লাসরুম হবে ওপরে। আশা করি, দ্রুততর সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published.

scroll to top