রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার গত ২৪ জানুয়ারি এক নারীর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে।
বনানীতে বাস করা ওই নারীর নমুনা জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে দেওয়া হলে গবেষকেরা এটিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের অস্তিত্ব বলে নিশ্চিত করেন।
বিষয়টি নিয়ে দেশের একটি জাতীয় দৈনিক সংবাদ প্রকাশ করে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের অস্তিত্ব বাংলাদেশে পাওয়া গেছে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি গবেষকরা করোনার ওই হোল জিনোম সিকোয়েন্স জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটার (জিসএআইডি) তথ্যভান্ডারে জমা দেন।
এরপর গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিসএআইডির ওয়েবসাইটে তা প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশে এই নতুন স্ট্রেইন পাওয়ার খবর বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির গবেষক দলও নিশ্চিত করেছে।
তারা ইতোমধ্যে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) বিষয়টি জানিয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়।
তবে, আইইডিসিআরের পরিচালক তাহমিনা শিরিন বিষয়টি জানেন না বলে জানান ওই জাতীয় দৈনিকটিকে। তিনি বলেন, ‘এটার কথা আমরা জানি না। আমাদেরকে জানানো হয়নি।
তবে জিসএআইডির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে বলে জেনেছি।’ দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনটি জাপান, ফিলিপাইন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ৬১টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভারতে চারটি, সিঙ্গাপুরে তিনটি, থাইল্যান্ডে ছয়টি ও চীনে একটি দক্ষিণ আফ্রিকার করোনার নতুন স্ট্রেইনের অস্তিত্ব মিলেছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকার এই স্ট্রেইনটি মানুষকে সংক্রমিত করে মারাত্মক অসুস্থ করে ফেলে- এমন অকাট্য প্রমাণ নেই।
তবে এ ধরনের ভাইরাস দ্রুত ছড়ায় এবং করোনার টিকা এই স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে না। এদিকে, বিসিএসআইআর জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির এক বিজ্ঞানীর বরাত দিয়ে ওই দৈনিকটি বলে, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার এই ভ্যারিয়েন্টটি ‘এন ৫০১ ওয়াই’ নামের একটি মিউটেশন (রূপান্তর) বহন করে, যা এটিকে আরও সংক্রমণ বা ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে।
এই ভাইরাসের আরেকটি মিউটেশন ‘ই৪৮৪কে’ আরও ভয়াবহ। এটি মানুষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে ধোঁকা দিয়ে টিকার কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে।’ বছরের শুরুর মাসেই যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে আসা ছয়জনের দেহে করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন পাওয়া গেছে।
বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তারা নতুন করে ৯৩টি করোনাভাইরাসের হোল জিনোম সিকোয়েন্স করেছেন। এর মধ্যে অন্তত ৭০টির মধ্যে যুক্তরাজ্যের স্ট্রেইনের অস্তিত্ব পেয়েছেন।