ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশ নিজেদের বিকাশ ও প্রগতির চেয়ে সমগ্র বিশ্বের উন্নতি দেখতে চায়। বিশ্বে অস্থিরতা, আতঙ্ক, সন্ত্রাস ও অশান্তির পরিবর্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা দেখতে চায় উভয় দেশ। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের দেখানো পথে আমরা এক সমান ও সামঞ্জ্যপূর্ণ সমাজের দিকে এগুচ্ছি।’
শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর ওড়াকান্দিতে মতুয়া প্রতিনিধিদের এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় দুই দেশের জনগণের কল্যাণের জন্য একজোট হয়ে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ওপর তাগিদ দেন মোদি।
তিনি বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের সামনে যে ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে, দুই দেশের একজোট হয়ে প্রত্যেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা উচিত। এটা দুই দেশের কোটি কোটি জনগণের কল্যাণের পথ।’
দুপুরে কাশিয়ানীর ওড়াকান্দিতে যান নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিনি হরিচাঁদ ঠাকুরের বাড়িতে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পূজা-অর্চনা করেন। পরে মতুয়া প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন তিনি।
এ সময় নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘এখানে আসার আগে আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে গিয়েছি। সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব, উনার ভিশন (লক্ষ্য) ও মানুষের প্রতি তার বিশ্বাস উদাহরণস্বরূপ।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেভাবে ভারত-বাংলাদেশের সরকার দুই দেশের স্বাভাবিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করছে, সাংস্কৃতিকভাবে এই কাজই ঠাকুর বাড়ি ও শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের বার্তা বহু বছর ধরে করে আসছে। একভাবে এই স্থান ভারত-বাংলোদেশের আত্মিক সম্পর্কের তীর্থ ক্ষেত্র। আমাদের সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে মানুষের, মনের সঙ্গে মনের।’
এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। বেলা সাড়ে ১১টার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
কাশিয়ানীর ওড়াকান্দিতে হরিচাঁদ ঠাকুর মন্দিরে নরেন্দ্র মোদি। ছবি : পিআইডি
মোদিকে টুঙ্গিপাড়ায় অভ্যর্থনা জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ পরিদর্শন, পুষ্পস্তবক অর্পণ, বৃক্ষরোপণ ও দর্শনার্থী বইয়ে সাক্ষর করেন।
এর আগে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যশোরেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন ও পূজা দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে সাড়ে ৪০০ বছরের পুরোনো যশোরেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেন এবং ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পূজা দেন তিনি। পরে সেখানকার ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকেদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুই দিনের সফরে ঢাকায় অবস্থান করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার (২৬ মার্চ) তিনি ঢাকায় আসেন। সকাল ১০টা ৩২ মিনিটে মোদির নেতৃত্বে আসা ৭১ থেকে ৭২ সদস্যের ভারতের প্রতিনিধি দলটি বহনকারী বিশেষ বিমানটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর মোদিকে নিয়ে মঞ্চে ওঠেন তিনি। তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা এবং গার্ড অব অনার দেয়া হয়।