রুশ আগ্রাসনে ইউক্রেনের ক্ষতি ৬ হাজার কোটি ডলার

টানা প্রায় দুই মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ সামরিক বাহিনীর এই আগ্রাসনে ভবন ও অবকাঠামোগত ভাবে ইউক্রেনের ক্ষতি মোটামুটিভাবে ৬ হাজার কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস।

এছাড়া যুদ্ধ চলতে থাকলে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ডেভিড ম্যালপাসের ভাষায়, ‘যুদ্ধ এখনও চলছে এবং অবশ্যই ক্ষতির পরিমাণও আরও বাড়বে।’

শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। এদিকে বিশ্বব্যাংকের একটি ফোরামে দেওয়া ভার্চুয়াল বক্তৃতায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার আক্রমণের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রতি মাসে ইউক্রেনের ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন।

দোভাষীর মাধ্যমে দেওয়া ওই বক্তব্যে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের অবিলম্বে রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বাদ দেওয়া প্রয়োজন। একইসঙ্গে মস্কোর সাথে অবিলম্বে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য সকল দেশের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

জেলেনস্কির অভিযোগ, কৃষ্ণসাগরের ইউক্রেনীয় বন্দরে রাশিয়ার অবরোধ ইউক্রেনের রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। রাশিয়ার এই পদক্ষেপ বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকের এই বৈঠকের সাইডলাইনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন-সহ বেশ কয়েকটি দেশের অর্থ কর্মকর্তারা যুক্ত ছিলেন। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইয়েলেন বলেন, রুশ আগ্রাসনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইউক্রেনের পুনর্নির্মাণের কিছু খরচ রাশিয়াকে বহন করা উচিত। তার ভাষায়, ‘এটি স্পষ্ট যে ইউক্রেনে পুনর্নির্মাণের খরচ অনেক বেশি হতে চলেছে।’

এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হাতে জব্দ রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থও ইউক্রেন পুনর্গঠনের কাজে লাগাতে আগ্রহী মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন। তিনি বলছেন, ইউক্রেন পুনর্গঠনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে জব্দ করা রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ব্যবহার করা একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হতে পারে। তবে এর জন্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে আলোচনা ও চুক্তির প্রয়োজন হবে বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে সম্মেলনে ব্যক্তিগতভাবে যোগ দেওয়া ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহাল বলেছেন, ইউক্রেনের জিডিপি ৩০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে। এছাড়া রুশ আগ্রাসনের কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইউক্রেনের মোট ৫৬ হাজার কোটি মার্কিন ডলার লোকসান হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রুশ আগ্রাসনের কারণে ডেনিস শ্যামিহাল যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরেছেন তা ইউক্রেনের অর্থনীতির আকারের তিনগুণ বেশি। ২০২০ সালে ইউক্রেনের অর্থনীতির আকার ছিল ১৫ হাজার ৫৫০ কোটি মার্কিন ডলার।

Share this post

PinIt
scroll to top