সাংবাদিক প্রজন্মে এক জীবন্ত কিংবদন্তী তোয়াব খান

সাংবাদিকতা জগতে তোয়াব খান শুধু একটি নাম নয়, একটি ইতিহাস। সাংবাদিকতার বাতিঘর। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ ব্যক্তিত্ব। বাংলার সাংবাদিকতায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে তোয়াব খান এক জীবন্ত কিংবদন্তী।

দৈনিক সংবাদের মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন ১৯৫৫ সালে। সে হিসাবে তার সাংবাদিকতার বয়স ছয় দশকের! মুখর তাঁর পথচলা অন্তবিহীন। ব্যক্তিজীবনে যেমন তিনি স্মার্ট আর স্টাইলিশ, তাঁর লেখনীও তেমন নির্মেদ আর তীক্ষ্ণ।

সাংবাদিক হিসেবে সুদীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন তোয়াব খানের। ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি। একই বছর তাকে বাংলা একাডেমি সম্মানীত ফেলো নির্বাচিত করে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সেক্রেটারি ছিলেন তোয়াব খান। পরে রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ এবং প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রেস সচিবের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।

ছাত্রজীবন থেকেই তোয়াব খান তৎকালীন বিভিন্ন পত্রিকায় সমকালীন ইস্যু নিয়ে লেখালেখি করতেন। ১৯৫৩ সালে তার সাংবাদিকতা জীবনের শুরু। ১৯৫৫ সালে যোগ দেন দৈনিক সংবাদে। ১৯৬১ সালে দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক হন। ১৯৬৪ সালে যোগ দেন দৈনিক পাকিস্তানে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিকের ভূমিকা পালন করেন তোয়াব খান। সে সময় তার আকর্ষণীয় উপস্থাপনায় নিয়মিত প্রচারিত হয় ‘পিণ্ডির প্রলাপ’ নামের অনুষ্ঠান। দেশ স্বাধীনের পর দৈনিক পাকিস্তান থেকে বদলে যাওয়া দৈনিক বাংলার প্রথম সম্পাদক ছিলেন তোয়াব খান। ১৯৭২ সালের ১৪ জানুয়ারি তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এরপর ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব ছিলেন তিনি। দেশের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন এই যশস্বী সাংবাদিক। সবশেষ দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন তোয়াব খান।

সাংবাদিকদের সম্পর্কে পুরনো ধ্যান-ধারণাকেও তিনি বদলে দিয়েছেন নিজের স্টাইল স্টেটমেন্ট দিয়ে। সকালে যেমন তিনি একজিকিউটিভ ড্রেসে সচ্ছন্দ তেমনি সন্ধ্যায় ক্যাজুয়ালি ক্ল্যাসি। আর এক পোশাকে পরপর দুইদিন কখনোই নয়।

বাংলাদেশের সংবাদপত্রে একেকটি মাইলফলক রচিত হয়েছে তাঁরই নেতৃত্বে। বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসে সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠান বলতে যা বোঝায়, তার শেষ সলতে তোয়াব খান।
শুভ জন্মদিন হে দীপ্ত কর্মবীর তোয়াব ভাই।
আহমেদ আজম, ( সংবাদকর্মী )

সম্পাদক- প্রথম খবর

Share this post

PinIt
scroll to top