কে হচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক?

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে (ডিপিই) গত এক বছরে দুজন মহাপরিচালক (ডিজি) পরিবর্তন হয়েছেন। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর বর্তমান মহাপরিচালক অবসরে যাচ্ছেন। ফলে আবারও অধিদপ্তরে আসছেন নতুন মহাপরিচালক।

ফলে কাজ বুঝতে না বুঝতেই একজন ডিজির চাকরি শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাই দীর্ঘ সময় অর্থাৎ কমপক্ষে দুই বছর থাকতে পারেন—এমন মহাপরিচালক চান প্রাথমিক শিক্ষকরা।

জানা যায়, দেশে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন প্রায় চার লাখ। ডিপিইর অধীনে জেলা-উপজেলা পর্যায়েও রয়েছে অফিস ও কর্মকর্তা। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা ধরনের সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে।

এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষায়ও নানা ধরনের উদ্যোগ নিতে হয়। কিন্তু বেশির ভাগ মহাপরিচালক স্বল্প সময়ের জন্য আসায় তিনি যেসব উদ্যোগ নেন, তা বাস্তবায়ন করে যেতে পারেন না। আবার নতুন ডিজি এলে আগের ডিজির অনেক কাজই বন্ধ হয়ে যায়। এতে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।

সূত্র জানায়, ডিপিইর ডিজি হিসেবে গত ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যান এ এফ এম মনজুর কাদির। এরপর জানুয়ারিতে ডিজি হিসেবে যোগদান করেন মো. ফসিউল্লাহ। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যাবেন। এখন নতুন ডিজি কে হবেন তা নিয়ে তুঙ্গে রয়েছে আলোচনা।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ডিপিইর ডিজি হিসেবে পাঁচ-ছয়জন অতিরিক্ত সচিবের নাম শোনা যাচ্ছে। বর্তমান ডিজি মো. ফসিউল্লাহর মেয়াদ বাড়তে পারে বলে আলোচনা রয়েছে। তবে তিনি ইতিমধ্যে গ্রেড-১ পেয়েছেন। ডিজি পদের জন্য আলোচনায় আছেন প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি প্রকল্পের (ফেজ-৩) পরিচালক মো. ইউসুফ আলী।

তিনি ২০২৩ সালে অবসরে যাবেন বলে দীর্ঘদিন কাজের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ডিপিইর অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমদের নাম আলোচনায় রয়েছে। কিন্তু তাঁর চাকরি খুব বেশি দিন নেই। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক তপন কুমার ঘোষ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) রতন চন্দ্র পণ্ডিতের নামও রয়েছে আলোচনায়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে হবেন তা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি যাকে যোগ্য মনে করবেন তাঁকেই মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেবেন।

তবে অতীতে দেখা গেছে, যাঁরা প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে কাজ করেছেন, তাঁদের মধ্য থেকে মহাপরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। যাতে তাঁরা সহজেই কাজগুলো বুঝতে পারেন।’

বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির মুখপাত্র এস এম ছায়িদ উল্লাহ প্রথম খবরকে বলেন, ‘অধিদপ্তরে যাঁরা ডিজি হিসেবে আসছেন, তাঁরা যখন কিছু বুঝে উঠছেন, তখনই তাঁদের চাকরি শেষ হয়ে যাচ্ছে বা বদলি হয়ে যাচ্ছেন।

যিনি ডিজি হচ্ছেন তিনি শুরুতে আমাদের সমস্যার ব্যাপারে নানা প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু বাস্তবায়ন শুরুর আগেই তাঁর চাকরি শেষ হয়ে যায়।

যেমন—প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির পরও ২০১৪ সাল থেকে প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদার বিষয়টি ঝুলে আছে। তাই আমরা প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার চাই, যাতে এখান থেকেই ডিজি নিয়োগ দেওয়া যায়। আর যত দিন এটা হচ্ছে না তত দিন দীর্ঘসময় কাজ করতে পারেন—এমন কাউকে যেন ডিজি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।’

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published.

scroll to top