যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত ১ কোটি ১০ লাখ অভিবাসীকে নাগরিকত্ব দেবেন নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ বিষয়ে বিল পাসে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তিনি।
সম্প্রতি মার্কিন টেলিভিশন এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে কথা বলেছেন বাইডেন। ক্ষমতা গ্রহণের ১০০ দিনের মধ্যেই তিনি এ কার্যক্রম শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।
বাইডেন বলেন, শিশুকালে বাবা-মার হাত ধরে বেআইনি পথে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর এখনও অনেকেই বৈধ হতে পারেননি। অথচ তারা এই দেশের আলো-বাতাসে বড় হয়েছেন, শিক্ষালাভ করেছেন।
এমন ৮ লক্ষাধিক তরুণ অভিবাসীর জন্য ওবামা প্রশাসন যে কর্মসূচি (ড্যাকা) শুরু করেছিল তা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। যাদের বয়স ৩০ বছরের নিচে তারাও গ্রিন কার্ড পাবেন বলে উল্লেখ করেন বাইডেন।
ড্যাকা প্রোগ্রাম বাতিলের নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সুপ্রিম কোর্ট সেই আদেশ স্থগিত করেছে।
পিউ রিসার্সের মতে, ২০১৩ সালে ১০.৫ মিলিয়ন অবৈধ অভিবাসীর মধ্যে প্রায় ৪.৯৯ মিলিয়ন মেক্সিকোর, ১.৯ মিলিয়ন মধ্য আমেরিকার এবং ১.৪৫ মিলিয়ন এশিয়ার।
এখন অনেকাংশেই এই সংখ্যা বেড়ে গেছে। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অনিবন্ধিত অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আছেন।
এর আগে অবৈধভাবে বসবাসরত অভিবাসী ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট ওবামাও একই অঙ্গীকার করে ইউএস সিনেটে একটি বিল উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু রিপাবলিকানদের চরম অসহযোগিতায় তা পাস হয়নি।
২০০৮ সালে বিদায়ের প্রাক্কালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ একটি আদেশ দিয়েছিলেন। এর মাধ্যমে ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর যারা অবৈধ অভিবাসীতে পরিণত হন, তাদেরকে নানা প্রক্রিয়ায় গ্রিন কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। তবে যারা বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন, তারা কোনো সুযোগই পাননি।
জো বাইডেনের অঙ্গীকার অনুযায়ী হয়তো ১ কোটি ১০ লাখ অভিবাসীর ভাগ্য প্রসন্ন হবে। তবে এ জন্য দরকার হবে প্রতিনিধি পরিষদের মতো ইউএস সিনেটেও ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা।
৩ নভেম্বরের নির্বাচন অনুযায়ী, সিনেটে ডেমোক্র্যাটরা ৪৮টি আসন ধরে রেখেছে। রিপাবলিকানদের আসন ৫০টি। জর্জিয়ায় দুই আসনের ‘রানঅফ’ নির্বাচন হবে ৫ জানুয়ারি। দুটিই ছিল রিপাবলিকানদের। সেগুলো ডেমোক্র্যাটরা দখলে সক্ষম হলেই বাইডেন তথা ডেমোক্র্যাটদের অভিবাসন ইস্যুতে কিছু করার পথ সুগম হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
অর্থাৎ উভয় দল সমান আসন পেলে ডেমোক্রেটরা ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ভোট পাবেন। তারা ৫১ ভোটের মালিক হতে পারলে অভিবাসন বিলটি পাসে আর কোনো সমস্যা হবে না।