প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের টাকায় প্রধান শিক্ষক মহসিন মোল্লার আলিশান বাড়ি!

বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ৪৫ নম্বর হলদিয়া হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহসিন মোল্লার বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উত্তর পশ্চিম চিলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একাধিক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি দেওয়ার নামে বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে এই টাকা হাতিয়ে নেন। ভুক্তভোগীরা দুর্নীতি দমন কমিশন ও প্রশাসনের উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক মহসিন মোল্লার বিরুদ্ধে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।

এমনকি বিভিন্ন বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার অনুমোদন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেও তিনি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

চাওড়া পাতাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অতুল চন্দ্র শীল বলেন, চার বছর আগে তার মেয়ে রিনাকে উত্তর পশ্চিম চিলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে মহসিন মোল্লা তার কাছ থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে একটি ভুয়া নিয়োগপত্র ধরিয়ে দিয়েছেন।

আরেক ভুক্তভোগী মকবুল আকন জানান, তার মেয়েকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মহসিন ২০১৫ সালে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে এখন পর্যন্ত চাকরি দিতে পারেননি। টাকা ফেরত চাইলে মহসিন আরো দুই লাখ টাকা দাবি করেন।

ভুক্তভোগী সেরাজ হাওলাদার বলেন, 'চার বছর পূর্বে আমার ছেলে জহিরুলের চাকরির জন্য মহসিন মোল্লা আমার কাছ থেকে এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। আজ পর্যন্ত আমার ছেলের চাকরির খবর নেই। '

উপজেলার দক্ষিণ পূর্ব সেকান্দরখালী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল হক মাস্টারের কাছ থেকেও মহসিন মোল্লা স্কুল অনুমোদনের কথা বলে ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে তার নিজের স্বাক্ষরিত একটি ভুয়া অনুমোদনের কাগজ ধরিয়ে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মহসিন মোল্লার কাছে মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে যতগুলো অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। পারিবারিক ও সামাজিক কারণে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতেই অভিযোগগুলো আন হয়েছে। '

জানা গেছে, এভাবে অসংখ্য শিক্ষিত বেকার নারী-পুরুষ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও দাতাদের কাছ থেকে ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আমতলী পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বটতলা এলাকায় নির্মাণ করেছেন কোটি টাকা মূল্যের বিশাল একটি বহুতল আলিশান ভবন।

এ বিষয় আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মজিবুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম খবরকে বলেন, 'অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক মৌখিক অভিযোগ শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। '

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published.

scroll to top