ভারতে তুষারধসে নিহত ২০, নিখোঁজ ২ শতাধিক

ভারতের উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় তুষারধসে এখন পর্যন্ত ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ২৫০ জন শ্রমিক এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। রবিবার সকালে জোশীমঠের কাছে ওই তুষারধসের জেরে ধোলিগঙ্গায় জলস্তর প্রবল ভাবে বেড়ে যায়। তীব্র জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায় অনেকগুলো গ্রাম। এমনকি সেতুও ভেঙে পড়ে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

নিখোঁজ শ্রমিকরা তপোবন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করছিলেন। এদের সকলেই মারা গেছেন বলে প্রশাসন আশঙ্কা করছে। ভারতের সংবাদসংস্থা এএনআইকে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যসচিব ওম প্রকাশ জানিয়েছেন, আটকে পড়া জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের অনেকেই জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে থাকতে পারেন। নিহত এবং আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সংবাদ সংস্থার খবরে জানানো হয়েছে।

রেনি গ্রামের তপোবন এলাকায় ঘটনাস্থলের ভিডিওতে দেখা যায়, বাঁধ ভাঙা জল নদীর দু’পাশের বাড়ি ঘর ভেঙে তীব্র গতিতে এগোচ্ছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ভারত-তিব্বত সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২০০ জনের উদ্ধারকারী দল। চামোলি থেকে ঋষিকেশ যাওয়ার রাস্তায় ইতোমধ্যে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছে। তিনি পুরো বিষয়টির উপর নজর রাখছেন। মোাদী লেখেন, ‘পুরো দেশ উত্তরাখণ্ডের পাশে রয়েছে। উত্তরাখণ্ডের বিপন্নদের জন্য প্রার্থনা করছে দেশবাসী। আমি নিজে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছি। উদ্ধার কাজের প্রতি মুহূর্তের খবর রাখছি আমি।’

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইটারে জানিয়েছেন, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ইতিমধ্যেই জোশীমঠে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। এই সঙ্কট কালে দেবভূমিকে সবরকম সাহায্য করা হবে। এরপর আরও একটি টুইট করে তিনি জানান, ‘বিপর্যয় বাহিনীর আরও কয়েকটি দলকে দিল্লি থেকে বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঘটনাস্থলের কাছে’।

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত রবিবার দুপুরে ধসে বিপর্যস্ত এলাকাগুলির তথ্য জানার জন্য সাহায্য চাওয়ার নম্বর (হেল্পলাইন) প্রকাশ করেছেন।

ধসের কারণে ধোলিগঙ্গার দুই পাশের গ্রাম খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, তপোবনের কাছে নন্দাদেবী হিমবাহে ফাটল ধরায় ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উত্তরাখণ্ডের চামোলি থানার পুলিশ জানিয়েছে, অলকানন্দা নদীর তীরে যে ঘরবাড়ি রয়েছে, ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সেই জায়গাগুলিকেও খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভাগিরথী নদীর গতিপথ বন্ধ করা হয়েছে।

শুধু উত্তরাখণ্ড নয়, উত্তরপ্রদেশের গঙ্গার দুই পাশেও জারি করা হয়েছে চূড়ান্ত সতর্কতা। ঘটনায় ফলে বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন। শ্রীনগর ও ঋষিকেশ বাধের সংলগ্ন অঞ্চল খালি করে দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে এরকম প্রবল বৃষ্টি ও হরপা বানে উত্তরাখণ্ডে প্রায় ছয় হাজার মানুষ মারা যান।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published.

scroll to top