পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কুমিল্লার নির্ধারিত স্থানগুলোতে এবারও বসছে কোরবানির পশুর হাট। স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট বসবে বলে জানিয়েছে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো.আবুল ফজল মীর।
আর মাত্র কয়েকদিন পরই পবিত্র ঈদুল আযহা। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদুল আযহায় পশু কোরবানি করবেন। তাই এ বছর কুমিল্লা জেলার ৩৪০টি স্থানে বসছে পশুর হাট।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গত বছরের তুলনায় এবছর অর্ধেকে নেমে এসেছে পশুর হাটের সংখ্যা। চলতি সপ্তাহের শেষে জমে উঠবে পশুর হাটগুলো। তবে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে হাটের বিকল্প হিসেবে অনলাইনেও ব্যবস্থা করা হয়েছে পশু ক্রয়-বিক্রয়।
সোমবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো.আবুল ফজল মীর।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্র জানায়, একদিকে করোনা, আর অন্যদিকে ঈদুল আযহা। এ দুইয়ের মাঝে সমন্বয় করতে হবে। তাই কুমিল্লা জেলা প্রশাসন গত বছরের তুলনায় এ বছর কোরবানির পশুর হাট কমিয়ে এনেছে। এ বছর ৩৪০টি স্থানে বসছে কোরবানির পশুর হাট। যা গত বছরের প্রায় অর্ধেক।
তবে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এই বছর ৩৮টি স্থায়ী হাটের সঙ্গে আরও ৩৪০টি অস্থায়ী হাট মিলিয়ে মোট ৩৭৮টি হাট পরিচালিত হবে।
সূত্র আরও জানায়, এ বছর কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা এলাকায় ২০টি, সদর দক্ষিণে ২৩টি, লালমাইয়ে ১টি, বরুড়ায় ৪১টি, ব্রাহ্মণপাড়ায় ২০টি, নাঙ্গলকোটে ৩২টি, মনোহরগঞ্জে ২১টি, দেবিদ্বারে ৩০টি, চৌদ্দগ্রামে ৩৫টি, লাকসামে ২১টি, দাউদকান্দিতে ২১টি, তিতাসে ১৪টি, হোমনায় ১৮টি, বুড়িচংয়ে ২৫টি, চান্দিনায় ১৫টি, মুরাদনগরে ৩৪টি ও মেঘনার সাতটি স্থানে বসছে কোরবানির পশুর হাট। তবে এসব হাটে জনসমাগম হ্রাস এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়িয়ে কীভাবে হাটে ক্রয়-বিক্রয় চলবে জেলা প্রশাসন ইজারাদারদের সেই নির্দেশনাও দিয়েছে।
এছাড়া স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে জেলা প্রশাসন থেকে একটি অ্যাপসও উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আয়োজিত এক
সংবাদ সম্মেলনে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হয় কিভাবে অনলাইনে ক্রেতারা পশু ক্রয় করবেন।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো.আবুল ফজল মীর জানান, কুমিল্লায় কোরবানির পশুর পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। করোনা দুর্যোগের কারণে হাটে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে কাজ করবে জেলা প্রশাসন। বিকল্প হিসেবে অনলাইনে পশু ক্রয় করার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘অ্যাপস চালু করা হয়েছে। অ্যাপসে পশুর সম্পর্কিত সকল ডেটা সংরক্ষণ রয়েছে। তাই ইচ্ছে করলে পশুর হাটে না গিয়েও ঘরে থেকে পশু ক্রয় করা যাবে।’
জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘খামারি ও কৃষকরা ২ লাখ ৩১ হাজার ৬৫৪টি পশু পালন করেছেন। কুমিল্লা জেলায় চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার ৩০২টি। এখন পর্যন্ত কুমিল্লা জেলায় ৬৯ লাখ টাকার পশু অনলাইনে কেনাবেচা হয়েছে।’
হাটের নিরাপত্তার বিষয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘যতগুলো হাট পরিচালিত হউক না কেন সবগুলো হাটে পুলিশি নজরদারি থাকবে। হাটে শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পক্ষ থেকে সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’